গরমে ত্বকের যত্ন কিভাবে নেব ! - গরমে ত্বকের যত্ন ২০২৪
গরমে ত্বকের যত্ন ছেলেমেয়েদের খুব জরুরী। তাপমাত্রা বাড়ার সাথে সাথে এবং সূর্যের আলো আরও উজ্জ্বল হয়, আপনার ত্বককে কঠোর গ্রীষ্মের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য আপনার ত্বকের যত্নের রুটিন সামঞ্জস্য করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সঠিক পদ্ধতির সাথে, আপনি আপনার ত্বককে সুস্থ, হাইড্রেটেড এবং সারা মৌসুমে উজ্জ্বল রাখতে পারেন। এই বিস্তৃত নির্দেশিকাটিতে, আমরা আপনাকে বছরের উষ্ণতম মাসগুলিতে উজ্জ্বল ত্বক বজায় রাখতে সহায়তা করার জন্য গরমে ত্বকের যত্নের টিপসগুলি অন্বেষণ করব।
আরো পড়ুন : ছেলেমেয়েদের কালো ঠোঁট গোলাপি করার উপায় ২০২৪
গরমে ত্বকের যত্ন
➪ সূর্য থেকে আপনার ত্বককে রক্ষা করুন:
সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি আপনার ত্বকের ক্ষতি করতে পারে, যার ফলে অকাল বার্ধক্য, রোদে পোড়া, এমনকি ত্বকের ক্যান্সারও হতে পারে। আপনার ত্বককে রক্ষা করার জন্য, সবসময় বাহিরে যাবার কমপক্ষে 30 মিনিট আগে সানস্ক্রিম লাগিয়ে নিন। আপনার মুখ, ঘাড় এবং হাত সহ ত্বকের সমস্ত উন্মুক্ত স্থানে এটি উদারভাবে প্রয়োগ করুন এবং প্রতি দুই ঘন্টা পরে পুনরায় প্রয়োগ করুন। আর, সূর্যের প্রচন্ড তাপের সময় গুলিতে ছায়াতে থাকার চেষ্টা করুন, সাধারণত সকাল 10 টা থেকে বিকাল 4 টার মধ্যে, এবং অতিবেগুনী বিকিরণের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত প্রতিরক্ষার জন্য প্রতিরক্ষামূলক পোশাক, যেমন চওড়া-কাঁচযুক্ত টুপি এবং সানগ্লাস পরিধান করুন।➪ নিজেকে হাইড্রেটেড রাখুন :
স্বাস্থ্যকর ত্বকের জন্য সঠিক হাইড্রেশন অপরিহার্য, বিশেষ করে গ্রীষ্মের মাস গুলিতে যখন তাপ বৃদ্ধি পায়, তখন ঘাম এবং তরল শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। তাই আপনার ত্বককে ভেতর থেকে হাইড্রেটেড রাখতে সারাদিন প্রচুর পানি পান করুন। আপনার ত্বকের আর্দ্রতার মাত্রা বাড়াতে এবং তারুণ্য বজায় রাখতে আপনি আপনার খাদ্যতালিকায় হাইড্রেটিং খাবার যেমন তরমুজ, শসা এবং শাক-সবজি অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।➪ ত্বককে পরিষ্কার রাখুন :
গ্রীষ্মের সময়, আপনার ত্বক বেশি তেল এবং ঘাম উৎপন্ন করতে পারে, যার ফলে ত্বকের ছিদ্র বন্ধ হয়ে যায় এবং পিম্পাল হতে পারে। এই সমস্যা গুলি প্রতিরোধ করতে, আপনার ত্বককে প্রতিদিন দুবার একটি হাইড্রেটিং ক্লিনজার/ফেসওয়াশ দিয়ে পরিষ্কার করুন, যা ত্বক এর খারাপ তেল গুলিকে দূরে সরিয়ে দেবে। আর এমন ক্রিম ব্যবহার করুন যা নন-কমেডোজেনিক এবং সালফেট এবং অ্যালকোহলের মতো কঠোর উপাদান মুক্ত, নাহলে আপনার ত্বককে আরও শুকিয়ে এবং জ্বালাতন করতে পারে। পরিষ্কার করার পরে, আপনার ত্বককে ভারসাম্যপূর্ণ এবং হাইড্রেটেড রাখতে একটি হালকা ওজনের, তেল-মুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।➪ নিয়মিত এক্সফোলিয়েট করুন:
ত্বকের মৃত কোষ অপসারণ, ছিদ্র খুলে ফেলা এবং মসৃণ, আরও উজ্জ্বল বর্ণের জন্য কোষের টার্নওভারকে উন্নীত করার জন্য এক্সফোলিয়েশন চাবিকাঠি। যাই হোক, অতিরিক্ত এক্সফোলিয়েট না করার বিষয়ে সচেতন থাকুন, বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে যখন আপনার ত্বক সূর্য এবং তাপ থেকে জ্বালাপোড়ার জন্য আরও সংবেদনশীল হতে পারে। ফলের এনজাইম বা আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড (AHAs) এর মতো প্রাকৃতিক উপাদান সহ একটি মৃদু এক্সফোলিয়েটর বেছে নিন যাতে প্রদাহ বা লাল ভাব না করেই ত্বকের মৃত কোষগুলিকে দূর করা যায়। সপ্তাহে একবার বা দুবার এক্সফোলিয়েশন করুন এবং আপনার সতেজ এক্সফোলিয়েট ত্বককে সূর্যের ক্ষতি থেকে রক্ষা করার জন্য সর্বদা সানস্ক্রিন অনুসরণ করুন।➪ প্রতিদিন নিজেকে ময়শ্চারাইজ করুন:
গ্রীষ্মের উত্তাপে, আপনার ত্বকের প্রাকৃতিক বাধা ফাংশন বজায় রাখতে এবং ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধ করতে আপনার ত্বককে ময়শ্চারাইজ রাখা অপরিহার্য। একটি হালকা ওজনের, নন-কমেডোজেনিক ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন যা দ্রুত শোষণ করে এবং জেল বা লোশন সূত্রের মতো ছিদ্র আটকে রাখবে না। হায়ালুরোনিক অ্যাসিড, গ্লিসারিন এবং সিরামাইডের মতো উপাদান রয়েছে এমন ময়েশ্চারাইজার গুলি ব্যবহার করুন যাতে আপনার ত্বকে ভারী বা চর্বিযুক্ত অবশিষ্টাংশ না রেখে আর্দ্রতাকে ধরে রাখতে সাহায্য করে। হাইড্রেশন সিল করার জন্য গোসল করার পরপরই ময়েশ্চারাইজার প্রয়োগ করুন এবং আপনার ত্বককে সারা দিন নরম এবং কোমল রাখুন।➪ আপনার ঠোঁটকে রক্ষা করুন:
আপনার ঠোঁট রোদে পোড়া এবং ডিহাইড্রেশনের জন্য সংবেদনশীল, ঠিক আপনার ত্বকের অন্যান্য অংশের মতো, তাই SPF ধারণকারী পুষ্টিকর লিপবাম দিয়ে তাদের রক্ষা করতে ভুলবেন না। সারা দিন উদারভাবে লিপ বাম লাগান, বিশেষ করে বাইরে যাওয়ার আগে, এবং আপনার ঠোঁটকে হাইড্রেটেড রাখতে এবং সূর্যের ক্ষতিকারক UV রশ্মি থেকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজন অনুসারে পুনরায় প্রয়োগ করুন। সূর্যের সুরক্ষা প্রদানের সময় আপনার ঠোঁটকে ময়শ্চারাইজ করার জন্য মোম, শিয়া মাখন এবং নারকেল তেলের মতো উপাদান আছে এমন লিপবাম গুলি ব্যবহার করুন।➪ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অন্তর্ভুক্ত করুন:
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুলি শক্তিশালী যৌগ যা আপনার ত্বককে সূর্যের এক্সপোজার, দূষণ এবং অন্যান্য পরিবেশগত চাপের কারণে সৃষ্ট মুক্ত র্যাডিক্যাল ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে। অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করতে এবং তারুণ্য, উজ্জ্বল রঙ বজায় রাখতে আপনার রুটিনে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট-সমৃদ্ধ ত্বকের যত্ন পণ্য গুলি অন্তর্ভুক্ত করুন, যেমন ভিটামিন সি সিরাম, গ্রিন টি নির্যাস এবং নিয়াসিনামাইড (ভিটামিন বি 3)। সানস্ক্রিনের আগে সকালে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সিরাম বা ক্রিম প্রয়োগ করুন যাতে তাদের সুরক্ষামূলক সুবিধা গুলি সর্বাধিক হয় এবং আপনার ত্বককে সারা গ্রীষ্মে স্বাস্থ্যকর এবং প্রাণবন্ত দেখায়।➪ রোদে পোড়া রোগের যত্ন সহকারে চিকিৎসা করুন:
আপনার ত্বককে রক্ষা করার জন্য আপনার সর্বোত্তম প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, রোদে পোড়া এখনও হতে পারে, বিশেষ করে যদি আপনি পর্যাপ্ত সূর্য সুরক্ষা ছাড়াই বাইরে দীর্ঘ সময় কাটান। আপনি যদি রোদে পোড়া হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার ত্বককে আলতোভাবে চিকিৎসা করুন এবং ঠান্ডা কম্প্রেস প্রয়োগ করে, ঠান্ডা স্নান করে এবং অ্যালোভেরা জেল বা হাইড্রোকোর্টিসোন ক্রিম এর মতো প্রশান্তিদায়ক স্কিনকেয়ার পণ্য ব্যবহার করে জ্বালা এড়ান। হাইড্রেটেড থাকার জন্য প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন, এবং আরও ক্ষতি এবং প্রদাহ রোধ করতে সম্পূর্ণরূপে নিরাময় না হওয়া পর্যন্ত রোদে পোড়া ত্বককে অতিরিক্ত সূর্যালোকে প্রকাশ করা এড়িয়ে চলুন। এই প্রয়োজনীয় গ্রীষ্মকালীন ছেলেমেয়েদের ত্বকের যত্ন স্কিনকেয়ার টিপসগুলি অনুসরণ করে, আপনি আপনার ত্বককে স্বাস্থ্যকর, হাইড্রেটেড এবং সবসময় উজ্জ্বল রাখতে পারেন। আপনার ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকারক UV রশ্মি থেকে রক্ষা করতে মনে রাখবেন, হাইড্রেটেড থাকুন, আলতো করে পরিষ্কার করুন, নিয়মিত এক্সফোলিয়েট করুন, প্রতিদিন ময়শ্চারাইজ করুন এবং সর্বাধিক সুরক্ষা এবং পুনর্জীবনের জন্য আপনার রুটিনে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ পণ্যগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করুন। একটু বাড়তি যত্ন এবং মনোযোগ সহ, আপনি গ্রীষ্মের মাসগুলিতে এবং তার পরেও সুন্দর, উজ্জ্বল ত্বক উপভোগ করতে পারেন।আরো পড়ুন : চুলের গোড়া শক্ত ও মোটা করার উপায় ২০২৪
গরমে ত্বককে ভালো রাখার ঘরোয়া উপায়
এই গরমে ত্বকের সুস্থতার প্রতি বাড়তি খেয়াল রাখুন।
প্রচণ্ড গরমে সুস্থ থাকতে অবশ্যই সচেতন হতে হবে। ত্বকের সুস্থতার প্রতিও বাড়তি খেয়াল রাখুন। নইলে ত্বক হয়ে পড়বে নিষ্প্রাণ।
গরমে পানি ও তরল খাবার খেতে হবে পর্যাপ্ত। তাতে ত্বকের কোষও থাকবে সতেজ। ঘামের সঙ্গে বেরিয়ে যাওয়া পানির ঘাটতি যেমন পূরণ করতে হবে, তেমনি ঘামে চিটচিটে হয়ে যাওয়া ত্বক পরিষ্কারও রাখতে হবে ঠিকঠাক। তবেই তো ত্বক থাকবে সুস্থ ও উজ্জ্বল।
ফল খান কারণ : "ফলে পানি, ফলেই পুষ্টি"
আপনাকে ফল খেতে হবে রোজ। তরমুজ, বাঙ্গি, আপেল, আনারস, নাশপাতি, পেয়ারা, জামরুল, জাম্বুরা, হানিডিউ, শসা, গাজর—রোজকার খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন এসব ফল। কাজের ফাঁকে ক্ষুধা মেটাতে অন্য কোনো নাশতার আয়োজন না করে পানি, ফল বা ফলের রস খাওয়া যেতে পারে। ফল ও ফলের রসে মিটবে পানির চাহিদা, পাওয়া যাবে নানা পুষ্টি উপাদান। তবে ফলের রস বা অন্যান্য পানীয় গ্রহণের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখুন, তাতে যেন চিনি যোগ করা না থাকে। আরও মনে রাখতে হবে, ঘরে তৈরি পানীয়ই স্বাস্থ্যকর। আবার যাঁরা শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে সময় যাপন করেন, তাঁদেরও কিন্তু পানি ও তরল খাবার খেতে হবে ঠিকঠাক।
কিভাবে ত্বক পরিচ্ছন্ন রাখবেন
ঘাম, ধুলাবালু ও দূষিত পরিবেশের অন্য যেসব উপাদান ত্বকের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে, সেগুলোর প্রভাব থেকে বাঁচতে সঠিকভাবে ত্বক পরিষ্কার করা ভীষণ জরুরি। ত্বক পরিচ্ছন্ন রাখার উপায়—
শসার রস নিন এক টেবিল চামচ। সঙ্গে যোগ করুন দুই ফোঁটা লেবুর রস। ফেসওয়াশের বিকল্প হিসেবে প্রতি বেলায় ব্যবহার করতে পারেন এই মিশ্রণ। অবশ্য প্রতিবেলা শসার রস করে নেওয়া সম্ভব না-ও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ডিপফ্রিজের বরফের ছাঁচে শসার রস ঢেলে রেখে দিতে পারেন। প্রতি বেলা একেকটি কিউব বের করে মুখ হালকাভাবে ঘষে পরিষ্কার করে নিতে পারবেন।
সপ্তাহে এক দিন ত্বকের মৃত কোষ পরিষ্কার করতে বাড়িতেই তৈরি করে নিতে পারেন প্রাকৃতিক স্ক্রাব।
যেভাবে ত্বককে উজ্জ্বল রাখবেন
ঘরোয়া উপকরণ দিয়ে সহজে ত্বকের যত্ন নেওয়ার নিয়ম—
✪ শসার রস নিন ২ চা-চামচ, সঙ্গে ১ চা-চামচ টক দই, ১ চা-চামচ বেসন আর ১ চা-চামচ মধু। মাস্কটি ত্বকে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করার পর পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে এক দিন ব্যবহার করলে ত্বকের দাগছোপও কমে আসবে। ত্বক হয়ে উঠবে প্রাণবন্ত।
✪ চন্দনের গুঁড়ার সঙ্গে প্রয়োজন মতো তরল দুধ যোগ করুন, যাতে মিশ্রণটি ফেসপ্যাকের মতো ঘন হয়। এই প্যাক সপ্তাহে এক দিন ব্যবহার করলে ধীরে ধীরে বলিরেখাও কমে আসে।
✪ গুঁড়া দুধ নিন ১ টেবিল চামচ। সমপরিমাণ পানি দিয়ে গুলিয়ে নিন। মসুর ডালের বেসন নিন ১ টেবিল চামচ। সঙ্গে নিন ২ টেবিল চামচ ডাবের পানি আর আধা চা-চামচ মধু। মিশ্রণটি লাগিয়ে রাখতে হবে ২০ মিনিট। এই প্যাক ব্যবহারে ত্বক হয়ে উঠবে সতেজ, রোদে পোড়া দাগও দূর হবে। ব্যবহার করতে হবে সপ্তাহে একবার।
যেভাবে মৃত কোষ দূর করবেন
বিশেষজ্ঞদের থেকে জেনে নেওয়া হয়েছে, প্রতি সপ্তাহে ত্বকের মৃত কোষ দূর করার কিছু উপায়—
✪ চালের গুঁড়া ও গাজরের রস নিন এক টেবিল চামচ করে। সঙ্গে নিন সিকি চা-চামচ নারকেল তেল আর দুই ফোঁটা লেবুর রস। পাঁচ মিনিট ধরে ত্বকে আলতোভাবে মালিশ করুন এই মিশ্রণ। এরপর ধুয়ে ফেলুন।
✪ এক টেবিল চামচ বেসন, চার থেকে পাঁচ চা-চামচ কাঁচা দুধ আর দুই চা-চামচ মধু দিয়ে ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন। মিশ্রণটি মুখে লাগান। ২০ থেকে ২৫ মিনিট পর কুসুম গরম পানি হাতে নিয়ে বৃত্তাকার গতিতে আলতোভাবে মালিশ করে মিশ্রণ উঠিয়ে ফেলতে হবে। এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ধীরে ধীরে রোদে পোড়া ভাবও কমে আসবে।
ত্বকের খেয়াল রাখুন
- ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বকের যত্ন নিতে নানা উপকরণই প্রয়োগ করতে পারেন। তবে কোনো উপাদানে অ্যালার্জি থাকলে সেটি বাদ দিয়ে অন্য উপকরণগুলো দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন।
- গরমের সময়টায় ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারে অবহেলা করবেন না।
- বাইরে যাওয়ার আগে নিয়ম মাফিক সানস্ক্রিন সামগ্রী ব্যবহার করতে হবে।
- মাঝে মধ্যে মুখে পানি স্প্রে করতে পারেন।
আরো পড়ুন : সেরা ১৫+ কার্যকরী চুল পড়া বন্ধ করার উপায় ২০২৪
গরমে ত্বক ভালো রাখার সহজ ৪ টি উপায়
গ্রীষ্ম এলেই তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। বছরের এই সময়ে ত্বকের সঠিক যত্ন নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ অতিরিক্ত ঘামের ফলে ত্বকের অনেক সমস্যা হতে পারে।
ব্রণ এবং ফুসকুড়ি হওয়া ছাড়াও অতিরিক্ত তাপমাত্রা ত্বকের কোষগুলোকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তবে চিন্তা করবেন না, এই গরমে সুন্দর ও সুস্থ ত্বক পেতে আপনাকে সাহায্য করবে কিছু কাজ। চলুন জেনে নেওয়া যাক গরমে ত্বক ভালো রাখার সহজ ৪ টি উপায়-
১. ত্বক খুব বেশি ঘষবেন না
এক্সফোলিয়েটিং ত্বকের যত্নের একটি অপরিহার্য অংশ কারণ এটি ত্বক থেকে মৃত কোষ অপসারণ করতে সহায়তা করে। তবে এক্সফোলিয়েট করার সময় আপনার ত্বকে খুব বেশি ঘষবেন না, কারণ এটি ত্বকের স্তরগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং জ্বালাপোড়া বাড়িয়ে দিতে পারে। আপনার মুখে আলতো হাতে এক্সফোলিয়েট করুন এবং এটি শুকানোর জন্য তুলা ব্যবহার করুন। ত্বক উজ্জ্বল রাখতে সপ্তাহে দুইবার এক্সফোলিয়েট করুন।
২. তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন
স্বাস্থ্যকর ত্বক বজায় রাখার জন্য তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলা জরুরি। গ্রীষ্মে তৈলাক্ত বা ভাজা খাবার আপনার ত্বকের জন্য অত্যন্ত খারাপ হতে পারে কারণ এটি ব্রণের সমস্যা বাড়িয়ে দেয় যা আরও জেদী পিগমেন্টেশন দাগের কারণ হতে পারে। এই সময় এ ধরনের খাবার এড়িয়ে চলা পেটের জন্যও ভালো।
৩. ক্যাফেইন বা চিনিযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলুন
গ্রীষ্মের সময় আমাদের শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা অপরিহার্য। তবে ক্যাফেইন জাতীয় এবং অতিরিক্ত চিনিযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলুন। এ ধরনের পানীয়ের পরিবর্তে বিশুদ্ধ পানি, তাজা ফলের রস, ডাবের পানি ইত্যাদি পান করে হাইড্রেট থাকা প্রয়োজন। কারণ এগুলো ক্যাফেইন যুক্ত পানীয় আপনার শরীরের জন্য উপকারের চেয়ে বেশি ক্ষতি করতে পারে।
৪. সিন্থেটিক কাপড় পরা এড়িয়ে চলুন
অত্যধিক ঘাম এড়াতে সিন্থেটিক কাপড় পরা এড়িয়ে চলুন। এর পরিবর্তে সুতির জামা-কাপড় বেছে নিন। কারণ সুতির পোশাকের মধ্য দিয়ে সহজেই বাতাস চলাচল করতে পারে। এর ফলে ত্বকে ঘাম, ফুসকুড়ি এবং চুলকানি প্রতিরোধ করা সহজ হয়
গরমে ত্বকের যত্নে কয়েকটি উপকারী পন্থা
রোদের তাপে ত্বকের যে ক্ষতি সামলিয়ে উঠতে নিয়মিত যত্নের প্রয়োজন। এজন্য চাই নিয়মিত পরিচর্যা। তবে সেগুলো চালিয়ে যাওয়া কঠিন কিছু নয়।
সানস্ক্রিমের ব্যবহার
ত্বককে ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা করতে সানস্ক্রিম ব্যবহার জরুরি। আর একবার নয়, বার বার মাখার পরামর্শ দেন যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো ভিত্তিক ত্বক-বিশেষজ্ঞ এলিজাবেথ মুলান্স।
প্রতি দুঘণ্টা পরপর সানস্ক্রিম মাখা উচিত। এটা ত্বক যেমন রোদপোড়া থেকে রক্ষা করে তেমনি ত্বকের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকিও কমায়।
আর ঠোঁটে মাখতেও ভোলা যাবে না। কারণ এই জায়গায় রোদেপোড়া সমস্যাও হয় আবার ক্যান্সারও দেখা দিতে পারে। বাজারে শুধু ঠোঁটে ব্যবহার করার জন্যও সানস্ক্রিম পাওয়া যায়।
সবসময় ত্বক আর্দ্র রাখার চেষ্টা
এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ পানিশূন্যতা থেকে ত্বক শুষ্ক, রুক্ষ হয়। দেখা দেয় ‘ব্রেইকআউটস’।
আর এজন্য পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে- পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞগণ।
পানি পানে দেহে ভেতর থেকে যেমন শরীর আর্দ্র থাকে তেমনি বাইরে থেকে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে ব্যবহার করতে হবে ময়েশ্চারাইজার।
গরমে যদিও ত্বকে তৈলাক্তভাব হয় তারপরও ময়েশ্চারাইজার মাখা জরুরি। আর ঘন নয়, হালকা-ধর্মী ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।
এক্ষেত্রে ময়েশ্চারাইজার যুক্ত সানস্ক্রিম ব্যবহার করা হবে সবচেয়ে ভালো।
ভারী মেইকআপ নয়
গরমে যত কম মেইকআপ ব্যবহার করা যায় ততই মঙ্গল। তাছাড়া লোমকূপ আটকে দিতেও দায়ী হয় মেইকাপের উপাদান।
আর মেইকআপ করতে হলে, হালকা প্রসাধনী ব্যবহারের পাশাপাশি এসপিএফ যুক্ত মেইকআপ ব্যবহার করার পরামর্শ দেন চিকিৎসক।
সপ্তাহে দুয়েকবার এক্সফলিয়েট করা
সানস্ক্রিন ব্যবহার যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি দেহ ঠাণ্ডা রাখতে ঘামও হয়। আর এই দুইয়ে মিলে আটকে যায় লোমকূপ।
এই কারণে ত্বক এক্সফলিয়েট করা জরুরি, তবে ‘সানবার্ন’ বা রোদপোড়া ত্বক এক্সফলিয়েট করতে পারবেন না।
রোদ প্রতিরোধী পোশাক পড়বেন
শুধু পরিচর্যাই নয়, ত্বক রক্ষায় রোদ আটকায় এমন পোশাকও বেছে নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক।
এজন্য মাথায় চওড়া টুপি পরা, তাপ থেকে বাঁচাতে চুলে স্কার্ফ দেওয়া, রোদে ছাতা ব্যবহার, চোখ রক্ষায় সানগ্লাস পরা ইত্যাদি ব্যবহার জরুরি।
মুখ ধোয়া
গরমে বারবার মুখ ধুতে ইচ্ছে এমনিতেই হয়। এক্ষেত্রে সাধারণ ও হালকা ক্লেঞ্জার/ফেসওয়াশ ব্যবহার করে মুখ পরিষ্কার করতে হবে।
এছাড়া মুখ বেশি তৈলাক্ত বোধ হলে বা ঘাম বার বার মুছতে ব্লটিং পেপার বা টিস্যু ব্যবহার করতে পারবেন।
গরমে কীভাবে নেবেন ত্বকের যত্ন ?
গরমে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় আমাদের নাজুক ত্বক। এ সময় ত্বকে যেমন ঘাম বেশি হয়, তেমনি থাকে ব্রণ ওঠার প্রবণতা। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে বেছে নিতে পারেন বিশেষ কিছু উপায়। যে উপায়ে ত্বক নিস্তেজ হবে না; বরং বাড়বে ত্বকের জেল্লা।
গরমে ত্বকের যত্ন মেনে চলুন বিশেষ কিছু টিপস।
বেশি তাপমাত্রায় ত্বক নিস্তেজ হয়ে পড়ে। তাই ত্বককে নিস্তেজ ও ড্যামেজের হাত থেকে বাঁচাতে গরমের এই সময় ফেসপ্যাক ব্যবহারের বিকল্প নেই।
গরমের এই সময় তৈলাক্ত ত্বক আরও বেশি নাজেহালের শিকার হয়। তবে স্বাভাবিক ত্বকেও এ সময় দেখা দেয় ব্রণের উৎপাত। শুষ্ক ত্বকে এসব সমস্যা দেখা না দিলেও রোদে পোড়াভাব স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
তাই সব ত্বকের জন্য কার্যকরী এবং ঝটপট ব্যবহার উপযোগী এমন কিছু ফেসপ্যাক ও টিপসের কথা আজ আপনাদের জানাব–
- শসার রস, গোলাপজল ও চন্দন মিশিয়ে মুখে ম্যাসাজ করে লাগাতে পারেন।
- মধু ও ঠান্ডা টক দইয়ের ফেসপ্যাক গরমের সময় ত্বকে বেশ আরাম দেয়।
- পাকা পেঁপে ও কলার ফেসপ্যাকও গরমে ত্বকে ভালো কাজ করে। রোদে পোড়াভাব দূর করে।
- ওটসের সঙ্গে বাদাম তেল মিশিয়েও ফেসপ্যাক তৈরি করতে পারেন। ওটস ত্বকের অতিরিক্ত তেল দূর করবে। আর বাদাম শুষ্ক ত্বকে পুষ্টি জোগাবে।
- গরমে ঘাম থেকে মুক্তি পেতে মুলতানি মাটি ব্যবহার করতে পারেন। ত্বকের যত্নে এ মাটির উপকারিতা নতুন করে বলার কিছু নেই। তবে মুলতানি মাটি ত্বক আরও শুষ্ক করে তুলতে পারে। তাই এর সঙ্গে গোলাপজল ও মধু ব্যবহার করে মুখে ব্যবহার করুন।
- গরমে ত্বকের ঘাম ও তৈলাক্তভাব দূর করতে সব সময় টিস্যু সঙ্গে রাখুন।
- ত্বকের যত্নে ভারী নয়, ব্যবহারের জন্য বেছে নিন হালকা ময়েশ্চারাইজার।
- সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে বাঁচতে রোদে বেরোনোর ১৫-৩০ মিনিট আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। নির্দিষ্ট সময় পরপর মুখে পানির ঝাপটা দিন।
- ত্বকে স্বস্তি দেয়ার পাশাপাশি এসব ফেসপ্যাক ও টিপস উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করবে। সেই সঙ্গে ব্রণ হওয়ার প্রকোপ থেকেও রক্ষা করবে। তাই গরমে ত্বকের যত্ন ও সুরক্ষায় নিয়মিত এসব ফেসপ্যাক ব্যবহার করুন ও টিপস মেনে চলুন।
শেষ কথা ➡️ এই পোস্টে আমরা আপনাদের সাথে গরমে ত্বকের যত্ন কিভাবে নেওয়া উচিত সেই সকল বিষয় তুলে ধরেছি। আপনি এই পোস্ট মনোযোগ সহকারে পড়ুন এবং সেই সব নির্দেশনা মেনে চলুন তাহলে আপনার ত্বক গরম এর সময় ও স্বাস্থ্য উজ্জ্বল থাকবে । আপনার মতামত এবং প্রতিক্রিয়া অত্যন্ত মূল্যবান এবং আমরা সব সময় তাদের স্বাগত জানাই।এই রকম আরো পোস্ট চাইলে কমেন্ট করে আমাদের জানান, আবার আপনার সাথে দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।
আমার জীবন বিডিতে নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন, প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url